Ignore-এর 7 কান্ড শিখতেই হবে । সহজ ভাবে,মনের মত বাঁচতে চাইলে !

ignore ই মূলমন্ত্র : সমস্যা যখন চারপাশে

মানুষের জীবনটা বড়ই বর্ণময়। রং-বে-রঙের নানা রকম ঘটনার ঘনঘটা আমাদের জীবনের প্রতিটি বাঁকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করেছে। সেটা কখনো আমাদের আনন্দ দেয় ,কখনো বা দুঃখ । আমরা সেই সুখ দুঃখে ভরা জীবনটাকে বয়ে নিয়ে যায় একেবারে শিশুকাল থেকে মরণ পর্যন্ত । যে সুখ বা যন্ত্রণা শুরু হয় একদম শিশুকাল থেকে সেইগুলো ক্রমে ক্রমে বড় আকার ধারণ করে আমাদের জীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে । সেগুলো থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে Ignore করা শিখতেই হবে।

আমরাও যেন জীবনের সেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলার সুখটুকু কখনো কখনো অনুভব করি ।যখন সেটা ভীষণ যন্ত্রণাময় হয়ে যায় ,তখন আবার মরে যেতে ইচ্ছে করে । কিন্তু মরণটা খুব সোজা নয় , চাইলেই যে হবে ,সেরকম কোন কথা নেই ।আবার না চাইতেও কখন যে আপনার ঘাড়ে এসে পড়বে সেটা আপনি কেন ,কেউ জানে না ।

মৃত্যুর জন্য তো জীবন নয়, মৃত্যু তো একদিন হবেই । তাহলে মরার ভাবনা কেন ? তবুও মানুষ মরার চিন্তা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে না । জীবনে যখন প্রবল যন্ত্রণা আসে । সেই যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসবার কোন রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায় না । একদম কাছের কোন মানুষ সহানুভূতির সুযোগ নিয়ে ভীষণভাবে ঠকিয়ে চলে যায় । তখন , বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা সেভাবে আর মনের ভিতরে বেঁচে থাকে না ।

 বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা সেভাবে আর মনের ভিতরে বেঁচে থাকে না
বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা সেভাবে আর মনের ভিতরে বেঁচে থাকে না

এই জীবনের মধ্যে আমরা কত রকমের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে চলি । সেই অভিজ্ঞতাগুলো সব সময় যে সুখের , তা কিন্তু নয় । আমাদের চারপাশে নানা ধরনের মানুষ আমাদেরকে ঘিরে বাঁচে বা আমরা বিভিন্ন রকমের বা বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে বাঁচি । কারো সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে ,কারও সঙ্গে আবার দূরত্ববাড়ে।সে সবই জীবনের এক -একটা গল্প ।

একদম ছোটবেলায় আমাদের চোখে অনেক স্বপ্ন থাকে। অনেক কিছু করবার অনেক দূর পৌছাবার । কিন্তু সময় যে আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে বা কোথায় পৌঁছে দেবে সেটা কিন্তু আমাদের একদমই জানা থাকে না। আমরা ভাবি এক , অবশেষে হয় আর এক । যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের চোখে থাকে বড় হওয়ার শখ ।সেটা যেমন শরীরকে ঘিরে , তেমনি মনকে ঘিরেও ।

একটু বড় হবার পর বোঝা যায় আমাদের জীবনের স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য Income একটা বড় ব্যাপার। তখন অর্থ উপার্জনের জন্য আমরা নানা রকম শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণ করি । বিভিন্ন ধরনের Skill গ্রহণ করি ,যাতে খুব সহজেই আমরা উপার্জনের মুখোমুখি হতে পারি। এইগুলো শেখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইনস্টিটিউট আছে । আমরা আমাদের মনের মতো skill ডেভেলপের জন্য যে কোন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে যেতে পারি এবং আয়ত্ত করতে পারি যে কোন Skill . তারপর ঝাঁপিয়ে পড়া যে কোনো কর্মজগতে ।

এরপরেও আর একটা জগত আমাদের জন্য অপেক্ষা করে । সেটা হল আমাদের সংসার জগত। এখানকার নিয়ম-কানুন , কায়দা কানুন সব সময় এক থাকে না । সময় -সুযোগ স্থান- কাল ভেদে সেটা পালটে যায়। আমাদের জীবনে আসে নানা রকম মানুষ । আত্মীয়-স্বজন ,বন্ধু-বান্ধব । তাদের আচার-আচরণ, প্রভাব আমাদেরকে কখনো কখনো প্রভাবিত করে , আবার কখনো কখনো বিপথে ও চালিত করে । সেজন্য যাতে আমরা বিপথে চালিত না হই সেজন্য আমাদের নিজস্বতা থাকা খুবই প্রয়োজন।

এই নিজস্বতা অর্জনের জন্য প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতে হবে, প্রচুর ভালো ভালো মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। বিভিন্ন ধরনের মোটিভেশনাল speech শুনতে হবে। বাস্তবের সম্মুখীন হতে হবে। এর ফলে বাড়বে আমাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা করবার ক্ষমতা । যখনই নিজস্ব চিন্তাভাবনা করবার ক্ষমতা আমাদের বাড়বে , তখন আমরা অনেক কিছুর মধ্যে থেকেও আমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করতে পারব।

Intelligent people ignore
Intelligent people ignore

এই নিজস্ব চিন্তাভাবনা অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করবার সময়ে আসে যত জটিলতা। আমাদের আশপাশের মানুষ প্রথাগত কিছু ধ্যানধারণার বশবর্তী হয়ে, আমাদেরকে পরিচালনা করবার চেষ্টা করবেন, আমরা যদি সেটা শুনে, তাদের মনের মত হবার চেষ্টা করি বা তাদের দেখানো পথ ও মত অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করি, তাহলে খুব ভালো । সে ক্ষেত্রে বিফল হলেও সেই মানুষগুলির সাপোর্ট কিন্তু আপনি পেয়ে যাবেন।

সেই মানুষগুলো একবারও ভেবে দেখবে না , আপনি কি চান ? তাদের মত বা পথ অনুযায়ী চলতে , নাকি নিজের ইচ্ছামতো পথে চলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন ? আপনার কি কোন অসুবিধা হচ্ছে ? দেখার সময় তাদের নেই। তারা খুশি তাদের মত অনুযায়ী আপনি চলছেন। এটা যদি আপনিও মেনে নিতে পারেন তাহলে কোন সমস্যার কারণ নেই। বিরোধ বাঁধে তখন ,যখন আপনি তাদের মত অনুযায়ী না চলে ,নিজস্ব চিন্তাভাবনা অনুযায়ী চলার চেষ্টা করেন। নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী চললে আপনি যে সবসময় সফল হবেন তা কিন্তু নয় 1 বিফলতাও আসতে পারে।

এই যে আপনি বিফল হলেন তখন সেই মানুষগুলো, যারা আপনাকে অন্যভাবে চালাতে চাইছিল, তারা কিন্তু আসবে মনে করিয়ে দেবে, তারাই ছিল ঠিক। আপনি ভুল। সেই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও নিজেকে সংযত ও স্থির রাখার মত মানসিক ক্ষমতা কিন্তু নিজের মধ্যে থাকতেই হবে।

এই মানুষগুলোর এই মানসিকতার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদের আর একটা Skill অবশ্যই অর্জন করতে হবে সেটা হল ইগনোর করা। এই বিষয়ে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য মোটিভেটার Khadizatul Kobra Sonya খুব ভালো উদাহরণ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমাদের চারপাশের যে সমস্ত মানুষ আছে তারা আপনাকে জীবনে অনেক রকম বড় বড় স্কিল শিখতে বলবে। আমি একটা ছোট্ট স্কিল শিখতে বলি। এই স্কিলটার নাম হচ্ছে ইগনোর করা বা ‘পাত্তা না দেয়া। “

Ignore করুন । একদম পাত্তা দেবেন না ।
Ignore করুন । একদম পাত্তা দেবেন না ।

ধরা যাক ,কেউ আপনার চিন্তাভাবনা , ধ্যান ধারণা , বিশ্বাস অবিশ্বাস বা যে কোনো কিছু নিয়ে বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করল। আপনার অপছন্দের বিষয়গুলোকে নিয়ে, ৪-৫ মিনিট ধরে টানা লেকচার দিল ।কেন তার কথা যৌক্তিক এবং আপনারটা ভুল। কেন তার মত অনুযায়ী আপনাকে চলা উচিত। এটা সে আপনাকে ইনিয়ে বিনিয়ে বা সরাসরি আপনাকে গেলানোর চেষ্টা করছে । চেষ্টা করছে ,অযথা অযৌক্তিক তর্ক করে আপনাকে ভুল প্রমাণ করার। আপনার কোন কথাই সে শুনতেই চাইছে না বা গুরুত্বই দিচ্ছে না । আপনার ধ্যান- ধারনা, চিন্তা ভাবনা , বা আপনি কি চান বা কেন চান, সে বিষয়ে কিছু শুনতে চাইছে না। এরকম অবস্থায় আমাদের কি করা উচিত ? উত্তর হচ্ছে এই ধরনের মানুষ গুলো থেকে দূরে থাকুন । এদের কোন কথা একদম শুনবেন না যদি বা বাধ্যতামূলকভাবে শুনতেই হয়, তবে শুনুন কিন্তু একদম পাত্তাই দেবেন না।

এরা যখন বুঝে যাবে আপনি তাকে Ignore করছেন, আপনি তার কথা গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তখন তারা আপনাকে অযথা পরামর্শ দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। কারণ এটা তারা বুঝে যায়, তাদের বস্তা পচা ,প্রথাগত ধ্যান ধারণার বাইরে গিয়েও কিছু চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা আপনার আছে। যদিও এটা তারা ভালো চোখে দেখবে না । যখন আপনি আপনার উদ্দিষ্ট পথে, আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে, সফল হয়ে দেখাতে পারবেন। তখন কিন্তু তারা চিরতরে আপনার থেকে দূরে চলে যাবে। আর যদি সেই মানুষগুলো ধুরন্ধর প্রকৃতির হয়, তারা আপনার আশেপাশে ঘোরাফেরা করবে এবং বলবে আমি জানতাম তুমি ঠিক একদিন পারবেই।

সেজন্য আমাদের আশপাশে যে সমস্ত মানুষ আছে ,তাদের সবাইকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতে নেই। এই বাতেলাবাজ মানুষগুলোকে কখনোই গুরুত্ব দিতে নেই। তাদের কাজই হল ,আপনাকে আপনার মূল কাজ থেকে ডি ফোকাসড করে দেওয়া। সেই জন্য এই পন্ডিত মানুষদের থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিয়ে নিজের ধ্যান ধারণা এবং চিন্তাভাবনার প্রতি নিজেকে Strong রাখতে হবে। এদের সঙ্গে অযথা তর্ক-বিতর্ক করে নিজের অমূল্য সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না। সব থেকে ভালো হলো এদের থেকে দূরে থাকা ,এদেরকে ইগনোর করা , এদেরকে পাত্তা না দেওয়া।

Ignore the noise .focus your work
Ignore the noise .focus your work

এই ইগনোর করা বা পাত্তা না দেওয়া ,এটা কিন্তু কোন কথার কথা নয় । এটাও কিন্তু আমাদের জীবনের চলার পথের একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এটা একটা আর্ট। আর এই আর্ট সকলের বোধগম্য হয় না। বোধগম্য হবার প্রয়োজনও নেই। সেজন্য আমরা এই আর্টকে নিজের প্রাণের ভেতর ধরে নিয়ে সেটার এপ্লিকেশন করে নিজেকে একজন আর্টিস্ট বানিয়ে তুলব। তবে আর্টিস্ট যে একদম পারফেক্ট হতে হবে , তা কিন্তু নয়। মাঝারি মাপের আর্টিস্ট হতে পারলেও আমাদের জীবনটা হয়ে উঠবে অনেকটাই ঝামেলা মুক্ত, অনেকটাই স্বাধীন, অনেকটাই মনের মত।

এই ধরনের লেখা আরো পাবার জন্য এখানে ক্লিক করুন আর পড়তে থাকুন ।

Leave a Comment