আমাদের লক্ষ্য হোক Business
Business আমাদের করতেই হবে,কারণ-
বর্তমানে যে সময়টা চলছে, সেই সময়টা সব দিক থেকে যে খুবই ভালো তা কিন্ত নয়। বিশেষ করে কর্মসংস্থানের বিষয়ে তো নয়ই। বিশ্বব্যাপী চলছে একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্ষমতা দখলের ঘৃণ্য এক ষড়যন্ত্র এবং বিপথে অর্থ উপার্জনের নানা ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ।
সেখানে দাঁড়িয়ে ,কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে খুব একটা ভালো সময় চলছে তা কিন্তু বলা যায় না। সরকারি কাজকর্ম তেমনভাবে নেই বললেই চলে। যেটুকু হচ্ছে সেটুকু ঘুর পথে বা বাঁকা পথে, সেখানে মেধার মূল্য সেভাবে নির্ধারণ হচ্ছে না। ফলে মধ্যমানের এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের ভিতরে কর্মসংস্থান নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এরকম অবস্থায় -যেটা পড়ে থাকে , সেটা হল নিজে কিছু করার প্রচেষ্টা নেওয়া। অর্থাৎ সরকারি চাকরি যেহেতু নেই ,সেহেতু বেঁচে থাকার জন্য কিছু একটা তো করতেই হবে, তাও আবার কম পয়সার মধ্যে। সেজন্য আমাদের সামনে একটা পথেই খোলা, সেটা হল ছোট করে হলেও যেকোন বিজনেস শুরু করা।
তবে একটা ভালো লক্ষণ ইতিমধ্যেই যুবসমাজের মধ্যে ভীষণ সাড়া ফেলেছে সেটা হল, ছোট হোক বা বড় হোক, লাজ-লজ্জা, আত্মীয়স্বজনের মুচকি হাসি, অবজ্ঞা ইত্যাদিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে .কোন না কোন বিজনেস শুরু করে দেওয়া। এতে সাফল্যও আসছে নজরে পড়ার মতো।
বর্তমান সময়ে যুব সমাজ কিন্তু কিছুটা হলেও বিজনেস মুখী হয়েছে । এটা খুবই আশার কথা !
এই কাজে মেয়েরাও কিন্তু খুব একটা পিছিয়ে নেই। তারাও তাদের শিক্ষা, Skill এবং আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী কোন না কোন কাজ শুরু করে দিচ্ছে। এতে সফলতাও আসছে। ।
তবে বিজনেস শুরু করলেই সকলেই যে সফল হবে, একথা মাথার থেকে মুছে ফেলাই ভালো। কারণ কোন কাজেই ১০০% সফলতা মেলেনা। সফলতা তারাই পায়। যারা নিজেদের মধ্যে নির্দিষ্ট বিজনেসের বিভিন্ন Skill ডেভেলপমেন্ট করে তারপর বিজনেস শুরু করে। সে জন্যই আবেগের বশবর্তী হয়ে বা লোভে পড়ে, বিজনেস শুরু করা কখনই উচিত নয়।
বিজনেস শুরুর আগে অন্তত কিছুটা Home Work অবশ্যই করা উচিত। যাকে আমরা বিজনেসের ভাষায় বলে থাকি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ R and D আর । ছোট বড় যে কোন বিজনেস শুরুর আগে অবশ্যই এই কাজটি অবশ্যই করে নিতে হবে।
একটি নতুন বিজনেস শুরু করতে হলে কোন কোন বিষয়ে নজর রাখা উচিৎ সে বিষয়ে আমার আর্টিকেল আছে, ইচ্ছে হলে পড়ে নিতে পারেন।
আমি আজ এখানে পাঁচটি High growth Business Concept শেয়ার করব।
বর্তমান সময়ে এই কনসেপ্ট গুলি খুব যে অপরিচিত তা কিন্তু নয়। একদম ইউনিক সেরকমও নয়। খুবই পরিচিত কয়েকটি কনসেপ্ট। যেগুলো কোন একটি শুরু করলে আপনিও একজন সফল বিজনেসম্যান হয়ে উঠতে পারেন।
এখানে একটা কথা মনে রাখা আবশ্যিক, সেটা হল সব বিজনেসই লাভজনক। কিন্তু সেটা সব সময় আপনার ক্ষেত্রেও যে লাভজনক হবে তা কিন্তু নয়।
সেজন্য আপনাকে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে যে বিজনেসটি আপনার পছন্দ হলো , বা যে Businessটি আপনি করতে চাইছেন ,সেটি আপনার ভালো লাগছে কিনা বা সেই বিজনেস টি শুরু করতে হলে যে Skill গুলির প্রয়োজন বা যে পরিমাণ ইনভেস্টমেন্ট করতে হতে পারে , সে সামর্থ্য আপনার আছে কিনা ?
একবার শুরু করে দিলে, এবং মাঝ পথে ছেড়ে দিলে কিন্তু টাকা পয়সা যেমন নষ্ট হবে তেমনি মন মানসিকতাও নষ্ট হবে। এবং আপনার আশপাশের যে মানুষগুলো আপনাকে বিজনেস না করার পরামর্শ দিয়েছিল তারা আবারও আপনার আশেপাশে এসে ফিসফিসানি এবং হাসাহাসি শুরু করে দেবে।
আপনি যে বিজনেস শুরু করবেন, একদম প্রথম দিন থেকেই যে ইনকাম আসতে শুরু করবে সেরকম কিন্তু নাও হতে পারে। সেজন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে যেতে হবে। ইনকাম না আসলেও হতাশ হলে চলবে না। বিজনেসে ইন্টার্নাল গ্রোথ হচ্ছে, সেটা ভেবে আপনাকে চুপচাপ পরিশ্রম করে যেতে হবে। Business যখনই চলতে শুরু করবে তখন আমাদের অ্যাটিটিউড ও বদলে যাবে। আর আমাদের অ্যাটিটিউড বদলে যাওয়ার অর্থই আমাদের বিজনেসে ডেভেলপমেন্ট অবশ্যম্ভী হওয়া।
এখানে আমি যে কনসেপ্ট শেয়ার করব সেগুলো কিন্তু সবার জন্য নয়। বিজনেস বিষয়ে যারা আগ্রহী শুধুমাত্র তাদের জন্য ।যদি আপনার এর মধ্যের কোন Concept ভালো লাগে, এবং আপনার আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধবের প্রয়োজনে লাগতে পারে ,এইরকম মনে করলে অবশ্যই তাদের সঙ্গে এই কনসেপ্ট গুলি শেয়ার করুন। কারো কারো হয়তো এই কনসেপ্টটা কাজেও লেগে যেতে পারে। হয়তো খুঁজে পেতে পারে কর্মসংস্থানের নতুন দিশা।
চলুন Concept গুলি দেখে নেওয়া যাক …
১.Mobile and laptop repair shop
কেন আমি এত বিজনেস থাকতে মোবাইল ও ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর কথা বলছি ?
ধরা যাক ,আপনি বা আমি যে এলাকাতে বসবাস করি,-সেখানে অবশ্যই মোবাইল রিপেয়ারিং এর ছোটখাটো বা বড় কোন দোকান নজরে পড়বেই-কারণ মোবাইল ব্যবহার করে না এমন মানুষ বোধ হয় এখন আর একজনও নেই। আর মোবাইল থাকলে ছোট বড় নানা রকম সমস্যা তো লেগেই আছে। সেটা আমরা নিজেরাও খুব ভালোভাবেই জানি।
যদি কখনো আমাদের Mobile বা Laptop এ কোন সমস্যা দেখা দেয় ,
তখন আমরা আমাদের কাছে পিঠে যে সমস্ত রিপেয়ারিং সপ আছে সেখানে চলে যায় ।কারণ মোবাইল একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এটা ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত চলে না। সে স্টুডেন্ট হোক, বা যে প্রফেশনের লোকই হোক না কেন। মোবাইল বর্তমানে আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে যাওয়া একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
না খেয়ে বা একমুঠো খেয়েও একবেলা চলতে পারে–কিন্তু মোবাইল ছাড়া, নৈব: নৈব: চ:
এক মুহূর্তও চলবে না ,কারণ মোবাইল এখন আর কোন ফ্যাশনেবল ডিভাইজ নয়, এটি আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য পার্ট হয়ে গেছে। সারা বিশ্ব ও এর বাইরে নয়। বলা যেতে পারে “সারা বিশ্ব যেন মেতে আছে মোবাইলে।”
এমন হয়েছে, এখন আর মোবাইল ছাড়া মানুষের এক মুহূর্তও চলবে না। যার জন্য মোবাইল বা ল্যাপটপ খারাপ হলে, যত টাকায় খরচ হোক না কেন ,তা সারাবেই বা না সারিয়ে কোন উপায়ই নেই।
সে জন্যই এই মোবাইল বা ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর বিজনেস খুবই গ্রহণযোগ্য এবং প্রফিটেবল।-আর আপনি যদি চান এই ব্যবসা করে ইনকাম করতে-তাহলে খুলে ফেলুন মোবাইল অ্যান্ড ল্যাপটপ রিপেয়ারিং শপ।
সেজন্য ভালো কোন ইনস্টিটিউট থেকে প্রথমে মোবাইল ও ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর একটা জবরদস্ত কোর্স করে নিন। ভালো কাজ শিখলে বাড়িতে বসে বা চাইলে গ্রাম বা শহরের একটা ভালো জায়গাতেও দোকান খুলে বসতে পারেন। কোথায় ব্যবসা শুরু করবেন সেটা নির্ভর করছে আপনার ক্যাপিটাল ও কেমন Communication আছে তার উপর।
ভালো এলাকাতে দোকান করতে টাকা বেশি খরচ হলেও কাস্টমারও বেশি মেলে ফলে ইনকামও বেশি হয়।
এই ব্যবসা করলে কেমন ইনকাম হয় ?
সেটা কিন্তু কোন ব্যবসাদার ই আপনাকে খোলসা করে কখনোই বলবে না। খুব ভালো সম্পর্ক হলেও বলবে না। কারণ সে কখনোই চাইবে না তার আরও একজন নতুন প্রতিযোগী তৈরি হোক । বরং সে বোঝাবে ,এই business -এ আর আগের মতো লাভ নেই ।এই Business কখনোই শুরু করা উচিত নয় ।
জেনে রাখুন-একটু ভালো এলাকাতে দোকান চালু করতে পারলে মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা ইনকাম করা কোন ব্যাপারই নয়। যেটা অনেক চাকরিজীবী ও ইনকাম করতে পারে না। মোবাইলের সাথে ল্যাপটপ সারাই করতে পারলে তো আরো ভালো । এক ঢিলে দুই পাখি। তবে সেজন্য অবশ্য দুটি Skill-ই আপনার মধ্যে খুব ভালোভাবেই থাকতে হবে।
এখানে একটি কথা আপনাদের মাথায় নিশ্চয়ই এসেছে–, সেটা হল, মোবাইল ও ল্যাপটপ সারানোর জন্য বাজারে বড় বড় দোকান তো রয়েছেই, সেই সাথে আছে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির সার্ভিস সেন্টার। আছে অনলাইন পরিষেবা। এগুলো একদম ঠিক কথা, কোনটাই অস্বীকার করা যাবে না।
আচ্ছা আপনি বলুন তো ?
আপনার মোবাইল বা ল্যাপটপের কোন সমস্যা হলে, আপনি কি একেবারে প্রথমেই কোন অনলাইন পরিষেবা পেতে বেশি আগ্রহী থাকেন ?
বা একেবারে প্রথমেই কোন সার্ভিস সেন্টারে চলে যান ?
বা যেতে পছন্দ করেন ?
এ সবের উত্তর হল – না।
কারণ, মানুষের সাইকোলজি অনুযায়ী মানুষ কোন সমস্যায় পড়লে সর্বপ্রথম তার বাড়ির নিকটবর্তী বা কাছাকাছি কোন রিপিয়ারিং শপে যেতেই বেশি পছন্দ করে।
এর কারণ হলো–অনলাইন সার্ভিস ও কোম্পানির সার্ভিস সেন্টারে গেলে, সময় বেশি লাগে, মোবাইল বা ল্যাপটপ সেখানে জমা করে রেখে আসতে হয় বেশ কয়েকদিনের জন্য। আমরা চাই আমাদের কাজ সমস্যা চটজলদি সমাধান হয়ে যাক।
তবে সমস্যা যদি গুরুতর হয়, সেক্ষেত্রে অন্য কথা। অর্থাৎ দ্বিতীয় পছন্দ হিসাবে আমরা কোম্পানি সার্ভিস সেন্টার বা অন্য কোন জায়গার কথা ভাবি।
আর প্রথম আসা কাস্টমারের প্রবলেম যদি আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এবং অল্প পয়সায় সলভ করে দিতে পারেন, তাহলে সেই কাস্টমারের আপনার । শুধু তাই নয় ,তার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের কাজও কিন্তু আপনি নিঃসন্দেহে পেতে পারেন। সেটাও নির্ভর করবে আপনার কাজ ও ব্যবহারের উপর।
সেজন্য বিরক্ত নয়, কাজ করুন হাসি মুখে। কাস্টমাসের সঙ্গে সহজে সরল ভাবে মেলামেশা করুন। এবং সম্পর্ক রাখুন দীর্ঘ সময়।
২.Optical Shop.
বর্তমান সময়ে মানুষের চোখের সমস্যা অনেকটাই বেড়ে গেছে। সেজন্য চোখকে বাঁচাতে চশমা নিতেই হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু মানুষের চোখের সমস্যা না থাকলেও চোখকে সুরক্ষিত রাখতে বিভিন্ন ধরনের সানগ্লাস ও ব্যবহার করে থাকেন।
শুধু তাই নয়, যারা ইতিমধ্যে চোখের সমস্যার জন্য বা শখের বশবর্তী হয়ে চশমা ব্যবহার করছেন, সেই সমস্ত চশমাতে কোন সমস্যা হলে বা ভেঙেচুরে গেলে কোথায় যাবেন তারা ?
নিশ্চয়ই কোন চশমার দোকান !
সেজন্যই নতুন বিজনেস হিসাবে অবশ্যই চশমার দোকানের কথা ভেবে দেখতে পারেন। বিজনেস টি আর পাঁচটা ব্যবসার থাকে অনেক বেশি লাভজনক।
কারণ মানুষ যতই অনলাইনে ঝুকুক না কেন, চশমা কেনার ব্যাপারে বা চশমা সারানোর জন্য কিন্তু আশপাশের দোকানের কথাই প্রথমে তারা ভেবে থাকে। ফলে খুব তাড়াতাড়ি এই বিজনেস বাড়তে থাকে।
কেন করবেন এই বিজনেসটি ?
লাভের অংকটা দেখলে আপনার চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যাবে।
আশপাশের মোটামুটি চালু কোন চশমার দোকানে কিছুক্ষণ সময় কাটান ! দেখবেন, ৪০০ বা ৫০০ টাকার কমে কোনো চশমাই বিক্রি হচ্ছে না। এর থেকে বেশি তো আছেই।
অনেক মানুষই এসব শৌখিন জিনিসের ক্ষেত্রে টাকা খরচের ক্ষেত্রে সেভাবে ভাবেন না। একটু বেশি খরচ করে ,একটু বেশি আকর্ষণীয় জিনিসটি কিনতেই তারা পছন্দ করে।
আপনার নিজেরই যদি চশমা থাকে বা সানগ্লাস ব্যবহার করার অভ্যাস থাকে তাহলে নিশ্চয়ই জানেন একটা ব্র্যান্ডেড কোম্পানির চশমা বা সানগ্লাস এক হাজার বা ২ হাজার টাকার কমে হয় না।
আপনি এই সমস্ত বড় বড় কোম্পানির হোলসেল রেট শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। ফ্রেম শুরু হয় 40/50 টাকা থেকে । সেটা বেড়ে ২০০/৫০০/১০০০/২০০০ বা আরো বেশি হতেই পারে।
৫০ টাকায় কেনা সানগ্লাস বা চশমা বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়
১০০ টাকায় কেনা জিনিস বিক্রি হয় ১০০০ টাকায়
২০০ টাকায় কেনা সানগ্লাস বা চশমা বিক্রি হয় ২ হাজার টাকাতে
অর্থাৎ মার্জিনটা প্রায় দশ গুণ। আপনি যদি শুরুতে দশগুণ লাভ নাও করেন পাঁচ গুণ তো করবেন হাসতে হাসতে।
আপনি যদি ব্যবসা শুরুর আগেই একবার হোলসেল মার্কেটে ঘুরে আসেন, কথা বলেন কোন হোলসেলারের সঙ্গে, তাহলে বুঝে যাবেন, লাভের অংকটা !
এত গেল ফ্রেম বা সানগ্লাসের দাম,
লেন্সের দামের ক্ষেত্রেও লাভের অংকটা আরো বেশি ছাড়া কম নয়।
এখানে মনে রাখতে হবে, কোন ব্র্যান্ডেড কোম্পানির যেকোনো জিনিসেরই প্রফিট মার্জিন কিন্তু কিছুটা কম থাকে। কারণ ওই কোম্পানি ব্র্যান্ডিংয়ের পিছনে অনেকটাই খরচ করে। যার জন্য অবশ্য আপনার বিক্রি ও অনেকটা বেশি হয়ে থাকে।
এই রকম একটা দোকান ওপেন করতে প্রচুর খরচ হয় না। ব্যবসা মোটামুটি হলেও লাভের অংক মাসে মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ হাজার বা তার ও বেশি।
এই ধরণের Shop ওপেন করার জন্য খুব বড় জায়গারও প্রয়োজন নেই।
আপনার যদি নিজে হাতে কাজ করার মানসিকতা থাকে এবং একটু শিখে নিতে পারেন ,-আপনি নিজেই ছোট্ট একটি মেশিনের সাহায্যে গ্লাস কাটিং করে ফ্রেমে সেট করে দিতে পারবেন অনায়াসে। ওই মেশিনের দাম কিন্তু খুব একটা বেশি নয়। Internet search করে ও আমার কথার সত্যতা যাচাই করে নিতে পারেন ।
নতুন কিছু শুরু করার মানসিকতা থাকলে ,খুব কম অভিজ্ঞতাতে, খুব কম ইনভেস্টমেন্টে এই অপটিক্যাল শপ খোলা যেতে পারে। বড় শহরে দোকান করতে খরচ-বেশি হলেও-ছোট শহর বা মফস্বল শহর বা বাজার কেন্দ্রিক গ্রামেও এই ব্যবসা করা যেতে পারে। এটা নির্ভর করছে আপনার আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক যোগাযোগের উপর।
৩. পোষাক তৈরি
পুরুষ ও মহিলা দুজনেই পোশাক তৈরির ব্যবসা শুরু করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। মানুষ আর কিছু করুক বা না করুক পোশাক কিন্তু পরবেই। সেজন্য ঘরে বসেই এই কাজ শুরু করে দেওয়া যেতে পারে।
কাজ জানা না থাকলে, শেখার জন্য স্থানীয় বিভিন্ন হাইস্কুলে সেলাই বা কাটিং শেখানোর ভোকেশনাল কোর্সও করে নেওয়া যেতে পারে। খরচও খুবই সামান্য। সময় যে খুব একটা বেশি লাগে তা কিন্তু নয়। যদি আপনার ইচ্ছা ও সঠিক মানসিকতা থাকে তাহলে আপনিও উপার্জনের একটা নতুন দিশা খুঁজে পেতে পারেন।
এই ব্যবসা শুরু করতে খরচ বলতে একটা সেলাই মেশিন কেনা। প্রথমে ঘরে বসে শুরু করুন। আস্তে আস্তে নিজের চেনা -জানা মানুষ জনের কাজ করতে শুরু করুন ।ব্যবসা একটু বড় হলে বা আর্থিক সমস্যা না থাকলেও একবারে বড় দোকান খুলেও ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
মহিলাদের পোশাক, বিশেষ করে খুব ভালো ব্লাউজ কারিগরের কিন্তু বাজারে অভাব আছে। অনেক মহিলাকে আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায় ,চারদিকে একটা ভালো ব্লাউজ বানানোর কারিগর নেই !
এছাড়াও নতুন নতুন ডিজাইনের Exclusive পোশাক বানাতে পারলেও-ব্যবসা জমে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।
আপনার ব্যবহার ও কাজে অভিনবত্ব থাকলে এবং খুব সামান্য টাকা ইনভেস্ট করেও একটা দারুন বিজনেস গড়ে তোলা সম্ভব।
তবে মনে রাখবেন, একদম শুরুতে কিন্তু ব্যবসায় পরিশ্রম একটু বেশি করতে হবে। লাভটাও সেভাবে করলে চলবে না। মানুষের মনে একটা ধারণা সৃষ্টি করতে হবে যে, আপনি কম পয়সাতেও খুব সুন্দর কাজ করেন।
৪.Bag Making
যতদিন যাচ্ছে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই যেন ব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে, বিভিন্ন উপলক্ষে রং-বে-রঙের ব্যাগ ব্যবহার যেন এখন একটা ফ্যাশন। নানা ধরনের ব্যাগ যেন মানুষের রুচি ও স্ট্যান্ডার্ডকে ইন্ডিকেট করে। অনেক মহিলা আছেন যারা পোশাকের সাথে ম্যাচ করে ব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন। এইসব কারণেই ব্যাগের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান।
সেজন্য আপনি Bag Making কে বিজনেস হিসেবে শুরু করতে পারেন।
লেদার, প্লাস্টিক, কাপড়, পুতি, চুমকি বা জুটের তৈরি রকমারি ব্যাগের চাহিদা এখন প্রচুর। এতে লাভের পরিমাণও যথেষ্ট।-এজন্য আপনি ঘরে বসে অল্প টাকা পুঁজি নিয়ে অনায়াসে শুরু করতে পারেন এই বিজনেস। আর এই ব্যাগ তৈরীর সাজ সরঞ্জাম বা মেশিনপত্র আপনার নিকটবর্তী বাজার থেকেই পেয়ে যাবেন।
কাজ জানা না থাকলে, ইন্টারনেট সার্চ করে বা ইউটিউব দেখেও এই কাজ শেখার ঠিকানা ও মালপত্র পাবার ঠিকানা সহজেই সংগ্রহ করতে পারবেন। স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট আমাদের সামনে একটা নতুন জগৎ খুলে দিয়েছে। যেখান থেকে আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য তালাশ খুব সহজেই করে নিতে পারেন।
একদম প্রথমে খুব অল্প লাভ রেখে, নিজের পরিচিতি মহলে প্রচার করলেও ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়। প্রয়োজনে আপনার তৈরি ব্যাগের একটা সুন্দর ক্যাটালগ বানিয়ে ফেসবুকে আপনার ফ্রেন্ডদের মধ্যেও সেটা ছড়িয়ে দিতে পারে।
আপনার প্রোডাক্ট যদি সুন্দর হয়, এবং দামও যদি তুলনামূলকভাবে সস্তা হয়, আপনার Business বাড়তে কিন্তু খুব বেশি সময় লাগবে না।
নিজের তৈরি Product-এর পাশাপাশি ,নামি-দামি বিভিন্ন Company র ব্যাগ ও আপনি আপনার দোকানে রাখতে পারেন ।
৫.Fitness Training Club
আমরা সকলেই জানি স্বাস্থ্যই সম্পদ। আর এই সম্পদকে ঠিক রাখার জন্য আমরা কত কিছুই না করি । আর আমরা এটাও জানি ঘরে বসে কিন্তু ফিট বা সুস্থ থাকা কখনোই সম্ভব নয় ।
নিজের শরীরকে ঠিক রাখা এবং অন্যের চোখে নিজেকে সালমান খান বা সানি দেওয়াল করে তুলতে কে না চায় ?
সেই জন্যেই ইয়াং জেনারেশন ঢুকছে ফিটনেস ট্রেনিং সেন্টার বা জিমে।
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ আগেও ছিল এখনো আছে। বরং বলা যায় বর্তমানে ইনফরমেশনাল বিভিন্ন সাইট Grow-Up করার পর মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। মানুষ বুঝে গেছে ভালো থাকার একমাত্র পথ মুঠো মুঠো ঔষধ নয়। বরং ন্যাচারাল ওয়েতে যদি স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া যায়, তাহলে শরীর ও অর্থ দুটো বাঁচে। সেজন্য এখন বহু মানুষ বিভিন্ন যোগ প্রশিক্ষণ সেন্টার বা বডিবিল্ডিং সেন্টার বা জিমে Enroll করছেন ।
এই ধরনের স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণের যত মাধ্যম আছে তার মধ্যে ঝা চকচকে জিম সব থেকে এগিয়ে। ইয়ং জেনারেশন ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও মহিলা এই জিম কে ফাস্ট প্রায়োরিটি দিচ্ছেন। সেই জন্য এই বিজনেসের চাহিদাও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।
সেজন্য ,আপনার কাছে যদি যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ থাকে এবং একটা বড় জায়গা থাকে,তাহলে আপনি অনায়াসে একটি জিম চালু করে দিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন একটা বড় মাপের ঘর, আশপাশে খানিকটা খোলামেলা জায়গা থাকলে সেটা হবে আপনার অ্যাডভান্টেজ।
আপনার সেন্টারে থাকতে হবে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক Equipment বা যন্ত্রপাতি যেগুলো শরীর চর্চার কাজে খুবই প্রয়োজন হবে। আর প্রয়োজন হবে একজন সুশিক্ষিত ট্রেনার। যিনি সমস্ত operation টা হ্যান্ডেল করবেন।
আর আপনি যদি নিজেই যদি ট্রেনার হয়ে যান তাহলে তো খুবই ভালো। আপনার ঘরে পয়সা ঘরেই থেকে গেল। লাভ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেল। যেহেতু অনেকটা জায়গা লাগে এবং অত্যাধুনিক জিম করার ইকুপমেন্টের বা যন্ত্রপাতির দাম প্রচুর সেজন্য প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট একটু বেশি। সেটা যদি আপনি সাপোর্ট করতে পারেন লাভ কিন্তু যথেষ্টই।
একেবারে প্রথম অবস্থায় অনেক টাকা ইনভেস্ট করার ক্ষমতা না থাকলে বা প্রচুর টাকা ইনভেস্ট করতে না চাইলে, নিজের ব্যক্তিগত জিম ইকুইপমেন্টকে কাজে লাগিয়ে, পরিচিত মহলে এবং ক্লায়েন্টের বাড়িতে গিয়ে ব্যক্তিগত ভাবেও ওয়ান টু ওয়ান পদ্ধতিতে ট্রেনিং শুরু করে দিতে পারেন।
একটি জিম ভালোভাবে চালাতে গেলে যেমন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন তেমনি ভালো একজন ট্রেনারেরও দরকার। আপনি যদি নিজে ট্রেনার বা গাইড করতে পারেন সেটা সবচেয়ে ভালো। যদি আপনি অনভিজ্ঞ হন তাহলে ভালো কোন টিমের সাথে যুক্ত হয়ে বা ভালো একজন ট্রেনারের গাইড নিয়ে কিছুদিন তার সঙ্গে হাতে-কলমে কাজ করার অভিজ্ঞতা হলে তবে শুরু করুন।
নিজে কিছু না জেনে ,শুধু অন্যের ভরসাতে ব্যবসা কেন ,জীবনে কোন কিছুই করা উচিত নয়।
আপনি এক্সপার্ট না হয়ে কোনো কাজ শুরু করলে ,আপনি যখন বিপদে পড়বেন সকলেই কিন্তু মজা উপভোগ করবেন।
আপনার সেন্টারের প্রচারের জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুটি প্লাটফর্মকেই ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে আপনার স্টুডেন্টদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন তাহলে আস্তে আস্তে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়বে। তখন আপনি একটি বড় জিম বানিয়ে বড় আকারে বিজনেসটি স্টাবলিশ করতে পারবেন।
এই Businessটি বর্তমান সময়ের একটি Trained বিজনেস। ইনকামও নজর কাড়া। এই ট্রেনিং সেন্টারের পাশাপাশি এবং সাপ্লিমেন্টের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিলেও এক্সট্রা কিছুটা প্রফিট মিলে যাবে।
কারণ আপনার সেন্টারের Student দের এগুলি প্রয়োজন হবেই । Student রা যদি আপনার থেকে বাজার মূল্যে বা তার থেকে কিছুটা কম মূল্যে পেয়ে যায়–তাহলে তারা আপনার থেকেই সেগুলি কিনবে। এভাবে একটা ব্যবসার বিভিন্ন দিক থেকে ইনকাম আসতে থাকবে।
অনেক নতুন নতুন বিজনেস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন ও দেখে নিন কোন্ বিজনেস আপনার কাজে লাগতে পারে বা আপনার কোন কাছের মানুষের কাজে লাগতে পারে । আপনি দেখুন এবং প্রয়োজনে শেয়ার করুন।