সফলতা আমরা প্রত্যেকেই চাই, কিন্তু সেই সফলতা পাওয়ার জন্য যা করা প্রয়োজন, সেগুলি আমরা করি না। সেগুলো যদি ঠিকঠাক করা যেত তাহলে সকলেই তাদের উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যেত ।কিন্তু বাস্তবে সেটা হয় না।
আজ এই Article-এ থাকলো, সাফল্যের সেই গোপন চাবিকাঠি অর্থাৎ 7 Powerful Eagle Attitude গুলির বিস্তারিত আলোচনা ।কেউ যদি Eagle Attitude গুলি নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে নিতে পারে ,সে সফল হবেই । ১০০% গ্যারান্টি। একটু সময় নিয়ে লেখাটা পড়লে লাভ ছাড়া ক্ষতি হবেনা ।আর যারা ইতিমধ্যে জীবনের সফল, তারা নিজের আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবদের কে share করুন।হয়তো কারো কাজেও লেগে যাবে। বিজনেস সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন এখানে।
আমরা ছোটবেলা থেকেই জীবনে অনেক কিছু হবার স্বপ্ন দেখি। কি হবো ? ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, IPS ,IAS ,রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবী,ইত্যাদি ইত্যাদি ।আর এই স্বপ্ন গুলি দেখতে সাহায্য করে আমাদের প্রথাগত শিক্ষা ।কিন্তু, বর্তমানে প্রথাগত শিক্ষা সেভাবে মানুষকে দিশা দেখাতে পারছে না । সময় এসেছে, সেই প্রথাগত শিক্ষার বাইরে গিয়ে কিছু করে দেখানোর।
আমাদের ভবিষ্যৎ ও স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে হলে আমাদের ঈগল হতেই হবে Eagle Attitude কে grow -up করতেই হবে। কিন্তু কেন ?
আমাদের চারপাশে ময়ূর, কোকিল, পায়রা, কাক ,ঘুঘু’ র মতো এত সুন্দর সুন্দর পাখি থাকতে ঈগল হতে হবে কেন ?
কারণ — অন্যান্য পাখি দেখতে সুন্দর হলেও বা কারো কণ্ঠস্বর সুন্দর হলেও ঈগলের মধ্যে যে Attitude বা জীবন শিক্ষা পাওয়া যায় ,সেটা আর কারো থেকেই মেলেনা। সেজন্যই ঈগল হতে হবে ।
ঈগল দেখতে ময়ূরের মত সুন্দর নয় । কোকিলের মত সুন্দর করে ডাকতেও সে পারে না ! কিন্তু সে ওড়ে বহুদূর, মেঘের অনেক উপরে ।যেন আকাশের কাছে ।যেখানে অন্যান্য পাখি ওঠার কথা ভাবতেই পারে না ! সেজন্যই ঈগলকে বলা হয় পাখিদের রাজার রাজা ।মহারাজ !
সেজন্য , যদি Eagle Attitude বা ঈগলের জীবন দর্শন আমরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারি, তাহলে আমাদের জীবনের নকশাই বদলে যাবে। জীবনের সবচেয়ে বড় বড় Lesson গুলি আমরা Eagle-এর থেকেই পেতে পারি ।
ঈগল হল একটি পাখি। যে মেঘের অনেক উপর দিয়ে উড়ে যাবার ক্ষমতা রাখে ।যা অন্য পাখিরা ভাবতেও পারে না। বা যা তাদের কল্পনারও বাইরে । ঈগল যখন আকাশে ওড়ে, অন্যান্য পাখিরা তখন আতঙ্কে ভোগে ,কি জানে কি ঘটবে !
সারা আকাশ ও পক্ষী জগত যখন অকাল মেঘের গর্জনে কেঁপে ওঠে । আকাশে আনাগোনা বন্ধ করে দেয় সমস্ত পাখি । প্রচন্ড ঝঞ্ঝাতে গাছপালা দুমড়ে মুচড়ে লুটিয়ে পড়তে থাকে । প্রকৃতি হয়ে ওঠে অশান্ত। তখন প্রচন্ড সাহসী Eagle মুচকি হেসে, ডানা মেলে পাড়ি দেয় দুস্তর আকাশলোকে । পরোয়া করে না মেঘের তুমুল গর্জন বা প্রকৃতির ভ্রুকুটি । এই সমস্ত ভয়াবহ পরিস্থিতিকে অবজ্ঞা করে ,উড়িয়ে দেয় তার বিজয় রথ ।এই বাতাবরণ রাজ্য জয়ের থেকে কোন অংশে কম নয় । ঈগল যেন জয়ী বীর রাজাধিরাজ ।
প্রকৃতির চরম তাণ্ডবে যখন বিশ্ব চরাচর ভয়ে জড়োসড়ো, অন্যান্য পাখিরা যখন নিরাপদ স্থানে পালিয়ে বাঁচার পথ খোঁজে। তখন ঈগল সেসব পরোয়া না করে, মেঘের আরো উপরে ,আরো উপরে উঠতে থাকে তীব্র অহংকারে।যেন , জয়ের নেশা তাকে আষ্টে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে । সে যেন মেঘের রাজ্যে সাম্রাজ্য বিস্তার করবেই ।তীব্র ডানার ঝাপটে যেন সেই বার্তাই পৌঁছে দিতে চায় বিশ্বভূবনে ।
ঈগল এমন একটি পাখি, যে কারো সামনে মাথা নত করার কথা ভাবতেই পারে না ।সে যেন মহারাজ ।সমগ্র বিশ্ব তার অধীন। জগতে যত পাক-পাখালী আছে, তারা কেউ সাহসই করে না ঈগলের সামনে ডানা মেলতে ।এ যেন বিনা যুদ্ধে হেরে যাবার বা আত্মসমর্পণ করার এক অলীক উদাহরণ ।
যখন জীবজগত জীবনের জন্য মাত্র একবারই লড়াই বা সংগ্রাম করে, তখন ঈগল একই জীবনে বাঁচার জন্য দুবার জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হতে ও পিছপা হয় না। যখন অন্যরা পরাজয় স্বীকার করে জীবনের কাছে ।হতাশ হয়ে ভেঙে পড়ে। ঈগল শুধু যে ব্যতিক্রম – তাই নয় ,সে অনবদ্য নতূন জীবনের নজির সৃষ্টি করে। এর জন্য অবশ্য ঈগলকে মৃত্যুর সাথে চরম লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। যেটা অন্যদের কাছে স্বপ্নেরও অতীত। এটাই Eagle Attitude.
মৃত্যুর ভয়ে ,সকলে যখন লড়াই করা ছেড়ে দিয়ে ,মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে, ঈগল এমনই প্রচন্ড সাহসী যে, সে চোখে চোখ রেখে, মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে, নতুন জীবন ছিনিয়ে আনে । ভীষণ কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের স্বাদ কিন্তু ঈগলই পায় ।
ঈগলের চিন্তা-ভাবনা এমনই যে, অকর্মণ্য হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুবরণ করা বেশি শ্রেয়। আর মৃত্যুবরণ করার আগে ,আরো প্রচন্ড একটা লড়াই সে অবশ্যই করে এবং নতুন জয়ের পালক নিজের মুকুটেই গুঁজে নেয় । সে কখনোই মরার আগে, মৃত্যুকে বিনা যুদ্ধে স্বীকার করে না ।
সেজন্য মানুষের সাফল্যের ইতিহাসে ঈগলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জীবনে সফলতা হাসিল করতে হলে ঈগল হতে হবে।Eagle Attitude বা ঈগলের জীবন দর্শনকে কাজে লাগাতে হবে ।
ঈগলের মধ্যে যে সমস্ত গুনাবলী বা Attitude দেখা যায়, সেগুলি যদি আমরা রপ্ত করতে পারি – তাহলে একজন অসফল সাধারণ মানুষের জীবন ও চরম সফলতায় পরিবর্তিত হওয়া সম্ভব ।
সফলতার প্রথম ধাপ হল আত্মবিশ্বাসী বা Self Confident হওয়া । যেটা ঈগলের জীবন বিশ্লেষণ করলে ভীষণভাবেই চোখে পড়বে।ঈগলের আত্মবিশ্বাস সমস্ত পক্ষীজগতের চাইতে অনেক আলাদা ।তার আত্মবিশ্বাস তার নিজের উপরে ১০০% ।যেখানে বিন্দুমাত্র খামতি নেই ।সে নিজের আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে ,জীবনকে বাজি লাগিয়ে, মেঘের উপরে উঠতেও দ্বিধা করে না, ভয় পায় না। সে একবারও ভাবে না ,ওই উচ্চতায় নিমেষে তার প্রাণ সংশয় ঘটে যেতে পারে ।অকুতোভয় ঈগল তীব্র ডানার ঝাপটে ,মেঘকে পিছনে ফেলে – নিজের সাফল্যকে নিশ্চিত করে ।
ঈগলের এই জীবনচর্যা যদি আমাদের Attitude ,Thought ও Mindset পরিবর্তনে অনুঘটকের কাজ করে — তাহলে সাফল্য শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আমরাও হয়ে উঠতে পারি চরম সফল একজন মানুষ।ঠিক ঈগলের মত। সেজন্য আমাদের ঈগল প্রদর্শিত বেশ কয়েকটি নীতি মেনে চলতে হবে।
Eagle attitude :01
Maintain Your Standard
অন্যান্য পাখিদের মতো Eagle কখনোই দলবদ্ধভাবে আকাশে উড়ে না । ঈগল ওড়ে একা ।মেঘের অনেক ওপরে, যেখানে অন্যান্য পাখিরা ডানা মেলায় সাহস-ই করে না ।যদি অন্য কোন পাখিকে ঈগলের সাথে উড়তে দেখা যায়, সেটা অবশ্যই আর একটি Eagle.
অর্থাৎ আমরা সব সময় উচ্চ চিন্তাধারা মানুষের সাথে মেলামেশা করবো।যদি সেরকম কোন সুযোগ না মেলে, একা থাকবো । তবু কখনোই নিম্ন মানসিকতা বা Fixed Mindset-এর মানুষজনের সঙ্গে থাকবো না বা সময় কাটাবো না । Fixed Mindset–এর মানুষ আপনাকে কখনোই প্রথাগত চিন্তাধারার বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে দেবে না । এরা কখনোই চাইবে না, আপনি জীবনে বড় কিছু করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান। সেজন্য গড্ডালিকা স্রোতে গা না ভাসিয়ে ,ঈগল হয়ে উঠতে হবে । নিজেকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে হলে Eagle Attitude-ই একমাত্র পথ ।
আমাদের সবসময়ই নিজের Standard সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। একটা Eagle নিজের স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কে ভীষণ সচেতন ।তাকে কখনো আর পাঁচটা সাধারন পাখিদের সঙ্গে থাকতে বা উড়তে কখনোই দেখা যায় না। Eagle দল বেঁধে থাকতে বা চলতে পছন্দ করে না। কারণ সে খুব ভালোভাবেই জানে– তারাই দলবদ্ধ ভাবে থাকে, যাদের একা চলার সাহস নেই। যারা একা একা চলতে ভয় পায়।
ঈগল কখনোই নিজের মধ্যে সেই ভয়কে থাকতে দেয় না। প্রবল জেদ ও কঠিন লড়াই করার মানসিকতা মনে প্রাণে লালন করে। সেজন্য সে একা একা থেকেও অদম্য, অপ্রতিরোধ্য । সে অন্যের সাহায্যের পরোয়া না করে নিজের বিচক্ষণতা ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে, নিজের সাফল্যকে নিশ্চিত করে। যদিও ঈগল অনেক ওপরে ওড়ে এবং একা থাকে,তথাপি অন্য পাখিরা ঈগলের ক্ষমতা সম্পর্কে ভীষণভাবে ওয়াকিবহাল।তাকে ভয় ও সমীহ দুটোই করে।
ঈগল নিজের standard সম্পর্কে জানে বলেই, তার থেকে Below Standard পাখিদের সাথে মিশতে পছন্দ করে না ।
সেরকমই একজন লড়াকু মানুষ হিসাবে আমাদের মনে রাখা উচিত ,আমাদের শিক্ষা -দীক্ষা ও স্ট্যান্ডার্ডকে ।যে সমস্ত মানুষের মধ্যে আমাদের লেভেলের স্ট্যান্ডার্ড নেই ,তাদের সঙ্গে না থাকলেও চলবে। সত্যি কথা বলতে,তাদের সংস্পর্শে না থাকাই উচিত । কারণ তারা আপনার কোন কাজে আসবে না।
বরং আপনি এগোতে চাইলেও তারা বারে বারে বাঁধা সৃষ্টি করবে। আমাদের মনে রাখা উচিত ,স্বপ্ন আমাদের সেজন্য লড়াইটা আমাদেরকেই করতে হবে ।অতএব কে সাহায্য করলো, কে পাশে থাকলো–সেটা ভেবে লাভ নেই। Eagal-এর মতো লক্ষ্যে অবিচল থেকে ,সাফল্যের জন্য লড়াই করতে করতেই এগোতে হবে।
Eagle attitude :02
Self Confidence & Don’t Care Attitude
ঈগল যখন তার শিকারকে নিশানা করে ,তখন সেই শিকার পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য জীবনকে বাজি লাগিয়ে দেয়। সামনে যত বাধা-বিপত্তি- প্রতিরোধই আসুক না কেন, সে সেটা অতিক্রম করে শিকার ধরবেই। তখন সে আশপাশের পৃথিবী ও পরিবেশকে একদমই ভুলে যায়। বলা যায় Don’t Care করে।
কোন মানুষের মধ্যে যদি এইরকম আত্মবিশ্বাস একবার Grow করে ,তাহলে সে হয়ে উঠবে অপ্রতিরোধ্য। কারো ক্ষমতা নেই তাকে আটকে রাখে ।এইরকম মানুষ তার Goal কে হাসিল করবেই । সফলতা থাকবে তার পায়ের নিচে। সে হবে নতুন জীবনের সফল সৈনিক।
এটাই আমরা শিখি একটা Eagle-এর কাছ থেকে ।সেজন্যে ঈগল অন্য পাখিদের থেকে আলাদা ।পাখিদের রাজা ।রাজা তো সেই হয় ,যে প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে লড়াই করে ‘পরিস্থিতিতে নিজের কন্ট্রোলে এনে ,জয়কে সুনিশ্চিত করে ।
সেই কারনে, নিজের সাফল্যের জন্য ,নিজের মধ্যে Eagle Attitude কে Grow up করে জীবনের চলার পথে সেটা প্রয়োগ করতে হবে।
Eagle attitude :03
Be Focused Your Strong Vision
আমাদের Success কে Achieve করতে হলে, আমাদের Vision হতে হবে Clear ও Strong . একেবারে ঈগলের মত। ঈগল ৬/৭ কিলোমিটার দূরের শিকারকে পরিষ্কার দেখে নিতে পারে। আর একবার যখন সে তার লক্ষ্যকে দেখতে পেয়ে যায় ,তখন মাঝখানের কোন বাধা-বিপত্তি তাকে প্রতিরোধ করতে পারে না। সে শিকার ধরবেই।
এজন্য জীবনে কিছু অর্জন করতে হলে বা Success পেতে হলে Target বা Vision Clear ও Strong হওয়া ভীষণই জরুরি । এই দুটি জিনিস যখন আমাদের মধ্যে থাকবে ,তখন কোন বাধা-ই আমাদেরকে আটকাতে পারবে না। জয় আমাদের হবেই।
যখন ঈগল শিকার ধরার জন্য আকাশে ওড়ে, তখন সে কাউকে পরোয়া করে না ।না আবহাওয়া ,না অন্যান্য পাখপাখালীকে। তুমুল ঝড়-ঝঞ্ঝা বা ভীষণ বজ্রপাত বা তুমুল বৃষ্টিপাত— কিছুকেই সে Care করে না। ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের শিকারের উপর। তার প্রথম লক্ষ্য ও শেষ লক্ষ্য একটাই ।কারোর ক্ষমতা নেই ঈগলের লক্ষ্য বিচ্যুত করার । এতটাই স্থির লক্ষ্য তার ।
সেজন্য আমরাও যদি সফলতা Achieve করতে চায়, তাহলে আমাদের লক্ষ্যের প্রতি ঈগলের মতো Focused হতে হবে। অনেক বাধা-বিপত্তি আমাদের সামনে আসবে ।অনেক প্রতিকূল অবস্থা আমাদের লক্ষ্য থেকে আমাদের বিচ্যুত করতে চাইবে। সে সব কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে, বুক চিতিয়ে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যেতে হবে ।তখন আমাদের Attitude দেখে আশপাশের মানুষও ঘাটাতে সাহস করবে না।
Eagle attitude :04
Don’t Rack-up your Past
ঈগল কখনোই কোন মৃত প্রাণী স্পর্শ করে না। সে কেবলমাত্র জীবন্ত শিকারকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে ।
আমরাও আজ থেকে, আমাদের অতীতকে নিয়ে চিন্তাভাবনা একদমই করবো না । কারণ,“অতীত যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই দেয় না”। যা আমাদের যন্ত্রণা দেয় ,সেটা থেকে দূরে থাকাই ভালো ।”অতীত” একটি মৃত ইতিহাস, সেটা না ঘাটাই ভালো। মৃত, পচা, গলা ,বিরক্তিকর ইতিহাস হতাশার দুর্গন্ধ ছাড়া সেরকম কিছু দিতে পারে না ।
সেজন্য সেই অতীত থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা উচিত । আর যারা ওই অতীত আপনাকে মনে করিয়ে দেবে, বা ওই অতীত আপনাকে মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করবে, তাদের থেকেও দূরে থাকাই শ্রেয়। না হলে, আমাদের স্বপ্নের সফলতা পেতে সমস্যা হবে। নিজের অবশ্যম্ভাবী সফলতা বিষয়ে Excited থাকতে হবে এবং স্বপ্নকে Guard wall দিয়ে সুরক্ষিত করতে হবে ।অতীতকে অতীতেই ফেলে রাখা উচিত ।বর্তমানে কখনোই স্থান দেওয়া উচিত নয় ।
আমাদের অতীত যদি একবার আমাদের বর্তমানে Entry নিয়ে নেয় ,তাহলে সমস্ত স্বপ্নের সমাধি ঘটে যাবে। সেজন্য ঈগলের মত, মৃত প্রাণী না খেয়ে, টাটকা সজীব স্বপ্নকে লালন করতে হবে।
Eagle attitude :05
Fell Excitement with your work
দুর্যোগ বা সমস্যা আমাদের চলার গতিতে থামিয়ে দেয়। একটা ঈগলের Mind Set কিন্তু সম্পন্ন বিপরীত। যখন প্রকৃতির তাণ্ডব শুরু হয়। আবহাওয়া ভয়াবহ হয়ে ওঠে ।সমস্ত পাখিরা বাসাতে লুকিয়ে পড়ে বা কোন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় খোঁজে বা আশ্রয় খুঁজে নেয়। কিন্তু ঈগল ,ঝড় বৃষ্টি দেখে ভয় পাওয়া তো দূরে থাক, সে ভীষণ মজা পায়। প্রচন্ড বাতাস যখন ঝড় হয়ে প্রকৃতিতে তুলকালাম কাণ্ড বাঁধিয়ে দেয় ,তখন ঈগল সেই প্রচন্ড বাতাসকে কাজে লাগিয়ে, আরো দ্রুতগতিতে উপরে উঠতে থাকে। আর উড়তে উড়তে সে একেবারে মেঘের উপরে উঠে যায়।
সেজন্য সাফল্য পেতে হলে, সমস্যাকে ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলে চলবে না । Excitement নিয়ে, ঈগলের মতো, লড়াই করতে করতে ঠিক এক সময়ে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। আমরা তো এই কথাটা নিশ্চয়ই শুনেছি,” সমস্যা শুধু সমস্যা-ই আনে না ,প্রতিটি সমস্যার ভিতরেই লুকিয়ে থাকে একটি সম্ভাবনা”।
সেজন্য আমাদেরকে সমস্যার ভেতর থেকেই ,সুযোগ বের করে নিয়ে ,সাফল্য পাবার কাজে ঝাঁপাতে হবে ।যেদিন আমরা সেই সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগানো শিখে যাব ,সেদিন আমরা হব প্রচন্ড সফল একজন মানুষ । অন্যদের থেকে অনেক আলাদা । যারা কোনদিন ভাবেনি আপনি সফল হবেন, তারা অবাক বিস্ময়ে আপনাকে দেখবে। আর খুঁজতে থাকবে আপনার সফলতায় তার অবদান।
Eagle attitude :06
Hard Life Vs Comfort Zone
ঈগল তার বাসা বাঁধে অন্যান্য পাখিদের মতোই ডালপালা ও খড়কুটো দিয়ে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, যখন তাদের বাসাতে ডিম ফুটে নতুন ঈগল জন্ম নেয়, একটু বড় হলেই ঈগল তার বাসা থেকে নরম খড়কুটো ফেলে দিয়ে, রুক্ষ ডালপালা বা টুকরো টুকরো পাথর বিছিয়ে দেয় , যাতে বাচ্চাগুলো বাসাতে Comfort Feel করতে না পারে।
ঈগল এটা জানে, বাচ্চা গুলো যদি একবার বাসাতে Comfortable হয়ে যায় ,সেই আরামপ্রদ বাসা ছেড়ে সে কোনদিনই বাইরে বেরোতে চাইবে না। সেখানেই সে বেশি সময় কাটাতে চাইবে ।কিন্তু ঈগল কোনদিনই সেটা হতে দেয় না। ঈগল জানে আজ যদি বাবা-মা হিসাবে তারা খারাপ হয় ,তাহলে তার সন্তান স্বাবলম্বী হবে । আর তারা যদি আজ তাদের সন্তানকে Comfort Zone থেকে বের করতে না পারে, তাহলে- তার সন্তান অন্যান্য পাখিদের মতই দুর্বল ও পরজীবী হয়ে বাঁচবে।
এটা একটা ঈগল বুঝলেও আমরা মানুষেরা কিন্তু এটা বুঝতে অনেকটাই দেরি করে ফেলি। Comfort Zone-ই যে সফলতা পাবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বাঁধা সৃষ্টি করে, কেউ কেউ বিষয়টা বুঝলেও, বেশিরভাগ মানুষই সেটা বোঝে অনেক দেরিতে। আসলে Comfort Zone আমাদের জীবনকে সবচেয়ে বেশি uncomfortable ও অসহ্য করে তোলে।
সেজন্য যদি আমরা সফলতা চাই বা অন্যকে সফলতা এনে দিতে চাই , সর্ব প্রথমে তার জীবনের খাতা থেকে Comfort Zone –এর পাতাটা ছিঁড়ে বাদ দিতে হবে। ঠিক ঈগলের মত।
জীবনে সফলতা চাইলে অবশ্যই ঈগল হতে হবে। একটি ইগল যেমন ভাবে এক জীবন থেকে ,নতুন জীবনে প্রবেশ করে বা নতুন জীবন লাভ করে ।সেই অসম্ভব কঠিন পথ নির্দেশ মেনে চলতে হবে ।
Eagle Attitude:07
Fight with blood for New life
যখন ঈগলের বয়স 40 বছর হয়, তখন সে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য আরেকবার লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়। এখানেই ঠিক হয়ে যায় ,সে লড়াই করবে না মৃত্যুর হাতে নিজেকে সঁপে দেবে। এই ৪০ বছর বয়সে– তার পাখা ভীষণ ভারী হয়ে যায়। সে আর আগের মত উড়তে পারে না। চেনা ডানার পালকগুলো তখন তার ভীষণ ভারী বোঝা মনে হয় । যে পাখাগুলো ছিল তার একদিনের যুদ্ধ জয়ের সঙ্গী, তারা যেন আজ ভীষন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ।
তার পায়ের নখ, যেটা ছিল তার শিকার ধরার মোক্ষম অস্ত্র– সেটা এমন লম্বা হয়ে যায়, যার সাহায্যে কোন শিকার ধরা একেবারেই অসম্ভব হয়ে ওঠে।
Eagle-এর ঠোঁট লম্বা হয়ে এতটাই বেঁকে যায়, যে ওই ঠোঁটের সাহায্যে সে শিকার ধরে খাবে সেটাও পারে না।
এই সময়টাই ঈগলের জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম সময় । চরম পরিণতি যেন তাকে হারিয়ে দিতে চাইছে ।তখন তার সামনে দুটি পথ খোলা থাকে–
১ . প্রকৃতির অমোঘ নিয়মকে মেনে নিয়ে সে ক্রমে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে। অথবা
২ . সে পুনরায় ,চল্লিশ বছর বয়সে নতুন জীবন লাভ করার জন্য লড়াই করবে ।
এখানে মজার বিষয় হল — ঈগল কিন্তু প্রথম পথটি কখনোই বেছে নেয় না। কারণ আমরা কেউই মরতে চাই না। সে বেছে নেয়, দ্বিতীয় পথটি । যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে চরম ও ভয়ানক যন্ত্রণাময় একটা জীবন যুদ্ধের একটা রক্তাক্ত অধ্যায়।
এই সময় প্রথমে সে তার অক্ষম ঠোঁটের সাহায্যে, ডানার বয়স্ক পালক গুলোকে একটা একটা করে ছিড়ে ফেলতে থাকে ।ভীষণ যন্ত্রণাকে সহ্য করেও প্রতিটি পালককে সে বিচ্ছিন্ন করে ডানা থেকে ।
নখ ও ঠোঁট সে পাথরের সঙ্গে ক্রমাগত ঠুকে ঠুকে ভেঙে ফেলে। যাতে সে নতুন ঠোঁট ও নখ পায়।
এই বিষয়টি যত সহজে ভাবা যায়, ততটা কিন্তু সহজ মোটেই নয়। এটা ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক ও কষ্টকর একটা সংগ্রাম ।নতুন জীবনের জন্য একটি ঈগল সেটা করতেও পিছপা হয় না ।
পরবর্তী ৬ মাস ঈগলটি অসুস্থ শরীর নিয়ে কোনমতে বেঁচে থাকে। এই ছয় মাসে তার ডানাতে নতুন পালক গজায়। জন্ম নেয় নতুন নখ ও ঠোঁট। আবার নতূন জীবন লাভ করে ঈগলটি । নতুন শক্তিশালী ডানা নখ ও ঠোঁট নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকারের উপর। শুরু হয় নতুন জীবনের জয়যাত্রা।
ঈগলের থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত, কিভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। কিভাবে লক্ষ্য স্থির রেখে জীবন যুদ্ধে জয়লাভ করতে হয় ।কারণ একটা লড়াই-ই পারে– একটা নতুন জীবন দিতে ।যে লড়াই করতে ভয় পায়, সে কখনো সফলতা পায় না। মনে রাখতে হবে ,অনেকগুলি বিফলতার সিঁড়ি টপকে তবেই সফলতার স্বাদ পাওয়া যায়। সফলতা পেলে আমাদের সম্মান বহুগুণ বেড়ে যায় ।অসফল মানুষকে কেউ পাত্তা দেয় না। কেউ না। আমাদের সমাজ – সংসার ভীষণ কঠিন। কেউ আপনার লড়াই বা যন্ত্রণার শরিক হতে চাইবে না।আবার সফল হলে, তারাই আমাদের চারপাশে ভিড় জমাবে। সেজন্য হাল ছাড়লে হবে না । কেউ পাশে না থাকলেও ঈগলের মতো কঠিন সংগ্রামের মুখোমুখি হতেই হবে । এর ফলে আমাদের লক্ষ্য বা স্বপ্ন পূরণ হবেই।
স্বপ্নপূরণ বা সফলতার জন্য ধৈর্য ও পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই । সফলতা পেতে লড়াই করতেই হবে ।আর যে বা যারা সাহস নিয়ে লড়াই করতে পারবে– তারা সফলতা পাবেনই । সঙ্গে সম্মান ও।
Grow with Winer Mind Set
ঈগলের জীবন চর্যা ও Attitude থেকে ,আমরা যদি তার mindset টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করি ,তাহলে আমরা সফলতা লাভের সূত্রটি খুব সহজেই অর্জন করতে পারব ।একটু চিন্তা করলেই বা অ্যানালিসিস করলে দেখা যাবে— আবহাওয়া খারাপ, বৃষ্টি হচ্ছে , মেঘ গর্জন করছে -যখন অন্য পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় , নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছে , সেই সময় একটি ঈগল , সেসব উপেক্ষা করে মেঘের উপরে উঠে ,নিমেষে শিকারের উপর হামলা করে বাজিমাত করে দেয় । সে এটাই Information দিতে চাই যে,পৃথিবীর কোন বাঁধাই আপনাকে থামাতে পারবে না ,যদি না আপনি নিজে De Motivated হয়ে থেমে যান। আমাদের মধ্যে যদি জয় করার ,সফল হবার প্রচন্ড Mind set থাকে— আমাদের সফলতা শুধু সময়ের অপেক্ষা।সেজন্য আমাদের মাইন্ড সেট কে Strong করতে হবে ।
আর যদি আমাদের Mind set দুর্বল হয়, তাহলে সারা জীবন আমাদের কষ্টের মধ্যেই থাকতে হবে। কেউ সফলতা আমাদের হাতে তুলে দেবে না। বরং আপনার অবস্থা দেখে তারা ভীষণ আনন্দ পাবে ।কারণ তারা যেটা চেয়েছিল , সেটাই হয়েছে। তাদের স্বপ্ন পূরণ হল। আপনার নয় ।
আমাদের নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আমাদের Mind set , আমাদের Attitude পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের Mind set যদি Growing Mode-এ Convert না করা যায় , তাহলে লড়াই করাটাও একসময় সম্ভব হবে না। হারিয়ে যেতে হবে জীবনের চক্রব্যূহে। পরাজয় কে হারিয়ে নিজেকেই জয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনতে হবে ।জীবনে হার-জিত থাকবেই। আপনি কোনটা বেছে নেবেন সেটা হল আসল Mind Set। আসল Secret।
তবে এখানে একটা কথা না বললেই নয় ।বর্তমান পৃথিবীর 95% মানুষ কিন্তু আগে থেকেই হেরে যাবার বা পরাজিত হবার মানসিকতা পোষণ করে। এবং ঝামেলাহীন বা টেনশন ফ্রি জীবন যাপনের জন্য অন্যের গোলামী করে অন্যকে ধনী করার কাজে জীবন কাটিয়ে দেন । এরা খুব ভালো এমপ্লয়ি হয়ে ওঠেন। বাকি 5% মানুষ, জীবনে চরম সফলতা লাভ করেন ,ওই ৯৫ শতাংশ মানুষের মেধা ও পরিশ্রমকে সামান্য অর্থের বিনিময়ে কিনে নিয়ে ।
এভাবে যারা বেঁচে থাকতে চায় ,তাদেরকে শান্তিতে থাকতে দিন। গোলাম হয়ে থাকতে দিন। চাকুরীজীবী হয়ে থাকতে দিন ।
কিন্তু আপনি যদি 5% এর দলে থাকতে চান ? তাহলে নিজের মধ্যে Eagle Attitude আনতেই হবে ।যার ফলে আমরা একই জীবনে দুইবার বা তারও বেশি বার নতুন নতুন সফলতা পাবো। সবচেয়ে বড় কথা ,পরাধীন ভাবে অন্যের অধীনে বেঁচে থাকার চাইতে, স্বাধীনভাবে, মাথা উঁচু করে ,অল্প দিন বেঁচে থাকাও আনন্দের ও গর্বের।
সেজন্য যতদিন বাঁচবেন– রাজার মতো বাঁচুন ,সম্রাটের মতো বাঁচুন ।একজন সফল মানুষের মত বাঁচুন।
এই ধরনের আরো আর্টিকেল পেতে চাইলে আমার ইউটিউব চ্যানেল Learn Digital Earn Money ও Sanjay Biswas Kolkata চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। এছাড়া আমার ফেসবুক প্রোফাইল ,ফেসবুক পেজ ,ফেসবুক গ্রুপ ফলো করে রাখতে পারেন।