সরলা দেবী চৌধুরানী : স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজসেবী ও নারী শিক্ষা প্রসারে একজন নির্ভীক মহীষসী।
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম একসময় সারা বিশ্বকে আলোড়িত করেছিল। শুধুমাত্র পুরুষ বিপ্লবী নয়, তাদের পাশাপাশি একদল দুঃসাহসিক দেশপ্রেমিক’ মহিলা ও নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন দেশ সেবায়। এক্ষেত্রে বাংলা ছিল অগ্রগণ্য, সেজন্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মহীয়সী মহিলা বিপ্লবীদের নাম আজীবন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মনীষীদের কর্মকান্ড আরো জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন।
এমনই একজন নারী হলেন সরলা দেবী চৌধুরানী। যিনি ছিলেন ভারত তথা বাংলার জাতীয় জাগরণের ইতিহাসের অন্যতম পথিকৃৎ। একটা স্মরণীয় নাম, যাকে আমরা ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের একজন বিশিষ্ট বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সাহিত্যিক হিসেবে জানি ।
বংশ পরিচয়
সরলা দেবী চৌধুরানী 1872 সালের 7 ই সেপ্টেম্বর (মতান্তরে 1873 সালের 9 সেপ্টেম্বর) জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জানকীনাথ ছিলেন নদীয়া জেলার একজন প্রসিদ্ধ জমিদার এবং কলকাতার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। জানকীনাথের আরেকটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর এর অন্তর্গত জয়রামপুরের বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তি জয়চন্দ্র ঘোষালের পুত্র। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর জানকীনাথের সাহসিকতা, তেজস্বিতা ও সমাজ সংস্কারমূলক কাজের উৎসাহ দেখে জানকীনাথের সাথে তার দ্বিতীয় কন্যা স্বর্ণকুমারী দেবীর বিবাহ দেন ।
জানকীনাথের বাবা জয়চন্দ্র ঘোষাল ছেলের বিয়েতে তীব্র আপত্তি তোলেন। জানকীনাথ বাবার আপত্তি অগ্রাহ্য করেন ।ফলে, পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন তিনি । ঠাকুরবাড়ির ঘর- জামাই থাকার প্রস্তাব জানকীনাথ অস্বীকার করেন এবং শ্বশুরকূলের ব্রাহ্ম ধর্ম গ্রহণ করেননি। তাঁর জীবনযাত্রা আধুনিক হলেও আত্মমর্যাদাবোধ, স্বাদেশিকতা ,কর্মোদ্যম ,তেজস্বিতা ও জাতিভেদ প্রথা মান্য না করা ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। যা পুরোপুরি জারিত হয়েছিল তাঁর মেয়ে সরলা দেবীর মধ্যে।সরলা দেবীর মা স্বর্ণকুমারী ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ কন্যা ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়দি ।সম্পর্কে সরলা দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ভাগ্নি ।স্বর্ণকুমারী ছিলেন বাংলার প্রথম মহিলা ঔপন্যাসিক। সরলা দেবী মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছিলেন সাহিত্য অনুরাগ।মায়ের সাহিত্য অনুরাগ ও বাবার স্বদেশপ্রেমের শিক্ষা এই দুই এর সংমিশ্রণে সরলা দেবী হয়ে ওঠেন স্বদেশের উন্নতি বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও কর্মপ্রচেষ্টার পৃষ্ঠপোষক। তাঁর স্বদেশ প্রেম মূলক ও বৈপ্লবিক কবিতা বাংলার বিপ্লব সাহিত্যে আজও বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
শিক্ষা
সরলা দেবী মাত্র 13 বছর বয়সে 1886 সালে কলকাতার বেথুন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। এই সময় তার সহপাঠী ছিলেন কবি কামিনী রায় ও লেডি অবলা বসু ।1890 সালে 17 বছর বয়সে ইংরেজি অনার্স সহ বিএ পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে “পদ্মাবতী” স্বর্ণপদক লাভ করেন। পিতার প্রবাস কালে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে তাঁর শৈশব কাটে ।বাল্য বয়সে তাঁর অসামান্য সাহিত্যপ্রতিভায় সকলে বিস্মিত হয়েছিল। মাত্র 10 বছর বয়সে “সখা” পত্রিকার জন্য একটি প্রবন্ধ লিখে পুরস্কৃত হয়েছিলেন. 12 বছর বয়সে “বালক “পত্রিকাতে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হলে, পরিবারের সকলে অতি আশ্চর্যান্বিত হয়েছিলেন। এই 12 বছর বয়সেই “ভারতী”পত্রিকায় তাঁর অন্য একটি রচনা প্রকাশ পায়।
সাহিত্যচর্চা
সরলা দেবী 19 বছর বয়সে মহাকবি কালিদাসের“মালবিকাগ্নিমিত্র” ছাড়াও অনেকগুলি সংস্কৃত নাটকের গবেষণা পূর্ণ সমালোচনা মূলক রচনা প্রকাশিত হলে সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি হয় ।তাঁর লেখা পড়ে তৎকালীন বিশিষ্ট সাহিত্যবোদ্ধারা প্রভূত প্রশংসা করেন । সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র স্বয়ং তাঁর রচনা পড়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন এবং সরলা দেবী কে ধন্যবাদ জানান ও একটি চিঠি লিখে তাঁকে বঙ্কিম গ্রন্থাবলী উপহার দেন ।
অতি শিশুকাল থেকেই সরলা দেবী সাহিত্যের পাশাপাশি সঙ্গীত ও নানাবিধ বাদ্যযন্ত্রে সমান অনুরাগী ও পারদর্শী ছিলেন। বেথুন স্কুলের ছাত্রী থাকাকালীন “ ডিউক ও ডাচেস অব কেন্ট” যখন কলকাতায় আসেন তখন তিনি বেথুন এর শ্রেষ্ঠ ছাত্রী হিসেবে পরিচিত হন এবং তাদের সামনে পিয়ানো সংগীত পরিবেশন করে খুবই প্রশংসা অর্জন করেন। পিয়ানো, বীণা ,বেহালা ও সেতার ছাড়াও দেশ-বিদেশের নানা বাদ্যযন্ত্রে তিনি ছিলেন অসাধারণ পারদর্শী ।
সরলা দেবীর কণ্ঠসঙ্গীত ছিল যথেষ্ট মনোগ্রাহী ও সুমিষ্ট । তিনি সেই সময় অনেক গানের স্বরলিপি ও রচনা করেছিলেন। তাঁর রচিত স্বরলিপি পুস্তকের মধ্যে “শতগান” নামক পুস্তকটি অন্যতম ।1307 বঙ্গাব্দে সরলা দেবীর “শতগান” প্রকাশিত হয় । আধুনিক গানের এটাই প্রথম স্বরলিপি।
সরলা দেবীর সেই চির শুদ্ধ জাতীয় সংগীত – “বন্দি তোমার ভারত জননী বিদ্যা মুকুট ধারিণী” অথবা “অতীত – গৌরব -বাহিনী মম বাণী” ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেরণা যুগিয়েছে। 1901 সালে কলকাতা কংগ্রেসের তাঁর লেখা – “অতীত – গৌরব – বাহিনী মম বাণী” গানটি গাওয়া হয়েছিল। তিনি ভারতীয় ও ইউরোপীয় সংগীতেও ছিলেন সমপারদর্শী ।এজন্য তিনি সমগ্র ভারতবর্ষে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ।
সরলা দেবীর শিক্ষা বিস্তারের প্রচেষ্টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ইংরেজি ও সংস্কৃত ভাষায় দক্ষতার জন্য তাঁকে মহীশূরের “মহারানী গার্লস স্কুলের” অ্যাসিস্ট্যান্ট লেডি সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিয়োগ করা হয়। তিনি ইংরেজি ও সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ফরাসি ভাষায় ছিলেন সমান পারদর্শী ।দক্ষতার সঙ্গে তিনি মহীশুরে এক বছর কাজ করেন এবং বিশেষ কারণে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন এবং ভারতী পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ,দীর্ঘদিন যোগ্যতার সাথে এই দায়িত্ব পালন করেন ।
ভারতী পত্রিকার সম্পাদিকা থাকার সময়ে তাঁর বহু রচনা প্রকাশিত হয়েছিল ।তাঁর রচনা গুলির মধ্যে গল্পের বই “নববর্ষের স্বপ্ন” আত্মজীবন কথা “জীবনের ঝরাপাতা” “শিবরাত্রি পূজা” ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য । তাঁর আত্মস্মৃতি কথা “জীবনের ঝরাপাতা” ছাড়া আর কোন রচনা-ই পত্রিকার পৃষ্ঠার বাইরে সংকলিত হয়ে পাঠকের সামনে আসেনি । ভারতী পত্রিকায় লেখালেখির সময় তিনি ভগ্নি নিবেদিতা ও বিবেকানন্দের সংস্পর্শে আসেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বিবেকানন্দের রামকৃষ্ণ ভক্তি সম্পর্কে অসহিষ্ণু কিছু মন্তব্য করাতে বিবেকানন্দ সরলার প্রতি বিমুখ হয়েছিলেন ।
বীরত্বের আদর্শ
স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি বিপ্লবের পক্ষপাতী ছিলেন। তাঁর বৈপ্লবিক ও সমাজ- মানস পরিবর্তনের কর্মপ্রচেষ্টা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় অর্থাৎ 1901 সালে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মহাত্মা গান্ধীর। তিনি হয়ে ওঠেন গান্ধীবাদী ।
তখন তিনিই প্রথম খদ্দরের শাড়ি পড়ে সর্বত্র যাওয়া শুরু করেন। এভাবে মেয়েদের প্রকাশ্যে পথে নেমে রাজনীতির বিপক্ষে ছিলেন মামা রবীন্দ্রনাথ ।সেজন্য সরলা দেবীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মতপার্থক্য দেখা দেয় এবং সম্পর্ক কিছুটা শিথিল হয়। তিনি বাংলার তরুণদের প্রাণে বীরত্বের আদর্শ ও প্রেরণা দেবার জন্য “বীরাষ্টমী” উৎসব চালু করেন।
এই উপলক্ষে লাঠি খেলা ,ছোরাখেলা, তরবারি খেলা, মুষ্টিযুদ্ধ প্রভৃতি পৌরুষ প্রদর্শনের অনুষ্ঠান হত। ব্যায়ামাগার, আখড়া প্রতিষ্ঠায় তিনি উৎসাহ দিতেন তাঁর মধ্যে থাকা রাজনীতি, দেশাত্মবোধ ,বীরত্ব্ ,তেজস্বিতা ও সামাজিক উন্নয়নের উদ্দীপনা সৃষ্টি ও জাতীয় বীরের সন্ধানে 1903 সালে শুরু করেন”‘প্রতাপাদিত্য উৎসব” ।
তখনকার দিনে এই উৎসব দেশের ও বাংলার তরুণদের প্রাণে একটা নবজাগরণ ও নতুন চেতনা এনেছিল। আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে এই “বীরাষ্টমী উৎসব” ও “প্রতাপাদিত্য উৎসব” দেখা যায়। এই সময়ে সশস্ত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয় ।
1905 সালে যখন বাংলায় স্বদেশী আন্দোলনের জোয়ার শুরু হয়, সেসময় স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহারের প্রেরণা ও উৎসাহ দেবার জন্য সরলা দেবী আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। ফলস্বরূপ হিরন্ময়ী দেবী প্রতিষ্ঠিত হিন্দু বিধবাদের জন্য একটি স্কুল ও হস্ত শিল্প কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ওই সমস্ত শিল্পকেন্দ্রে প্রস্তুত সমস্ত স্বদেশী শিল্প সামগ্রী বিক্রির জন্য 7 কর্নওয়ালিস স্ট্রীটে “লক্ষীর ভান্ডার” নামে একটি প্রতিষ্ঠান তিনি তৈরি করেন।
বিবাহ
সেই সময় প্রখ্যাত রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরলা দেবীর বিয়ে হবার কথা হয়,কিন্তু যেহেতু সরলা দেবী “পিরালী” ও “ব্রাহ্ম” পরিবারের মেয়ে ছিলেন সেজন্য প্রভাত কুমারের মা প্রবল আপত্তি তোলেন ,ফলে শেষ পর্যন্ত বিয়েটা আর হয়নি। 1905 সালের 5 অক্টোবর পাঞ্জাবের বিখ্যাত আর্যসমাজী ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান পন্ডিত রামভূজ দত্ত চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয়। লাহোর নিবাসী রামভূজ একদিকে ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং অপরদিকে ছিলেন জাতীয়তাবাদী নেতা। ফলে সরলা দেবীর কর্মকান্ডের কর্মক্ষেত্র পাঞ্জাব প্রদেশে আরো বিস্তৃত হয়ে পড়ল। যেহেতু রামভূজ আর্যসমাজী ছিলেন, সেজন্য ,যেখানে আর্যসমাজ ছিল, সেখানে সরলা দেবী কে বক্তৃতা করবার জন্য যেতে হতো ।
নারী কল্যাণ
বাংলা সাহিত্য ,রাজনীতি ,দেশসেবা, সমাজসেবা, এবং দেশের সাধারণ মেয়েদের শিক্ষা ও হস্ত শিল্পের প্রসার ও উন্নয়নের জন্য 1910 সালে এলাহাবাদে (লাহোরে) ভারতের প্রথম মহিলা সংগঠন “ভারত স্ত্রী মহামন্ডল” ও “ভারত স্ত্রী শিক্ষা সদন” প্রতিষ্ঠা করেন ।এই সংগঠন ভারতীয় নারীদের উন্নয়ন ও স্ত্রী শিক্ষা প্রসারের জন্য ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে শাখা বিস্তার করে ।
পত্রিকা সম্পাদনা
রামভূজ দত্ত চৌধুরী ছিলেন পেশায় আইনজীবী, পাশাপাশি তিনি লাহোরে “হিন্দুস্থান’ নামক একটি উর্দু সাপ্তাহিক সম্পাদনা করতেন। কিন্তু লাহোর হাইকোর্ট থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, তিনি উক্ত পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁকে আর হাইকোর্টে আইন ব্যবসা করতে দেওয়া যাবে না।
এই সময় সরলাদেবী “হিন্দুস্থানের” দায়িত্ব গ্রহণ করেন ও রাজরোষ অগ্রাহ্য করে সফলভাবে উক্ত পত্রিকা পরিচালনা করতে থাকেন এবং উর্দুর পাশাপাশি তার ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ করেন।“The Awakening of India” গ্রন্থে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড “হিন্দুস্থান” পত্রিকা থেকে অনেক কথা উদ্ধৃত করেছেন। পাঞ্জাবে থাকার সময় সরলাদেবী বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। 1907 সালে জন্ম হয় তার পুত্র দীপকের ।
1919 সালে “অসহযোগ আন্দোলনের” সময় সরলা দেবী প্রবল উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়েন, কিন্তু 1923 সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ফিরে আসেন কলকাতায়। এখানেও তার কর্মপ্রচেষ্টা চলতে থাকল। নতুনভাবে আবারো হাতে তুলে নিলেন ‘ভারতী” পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব। 1925 সালে “নিখিল ভারত সামাজিক” যে অধিবেশন হয়, তার নেতৃত্ব দান করেন সরলা দেবী। এরপর বীরভূম সাহিত্য সম্মেলনে সভানেত্রী ও ছিলেন তিনি। দেশের মহিলা ও যুবকদের আহ্বান তিনি কখনোই উপেক্ষা করতে পারেননি ।
মহা মুক্তির পথে
সরলা দেবী কেবলমাত্র দেশ প্রেমিক, সাহিত্যিক ,সমাজসেবক ,নারীবাদী ও বিপ্লবী ছিলেন না, শাস্ত্র চর্চা ও ধর্ম জিজ্ঞাসা ছিল তাঁর চরিত্রের উজ্জ্বল একটি দিক। এখানে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। জীবনের শেষ দশ বছর সরলা দেবী ধর্মগুরু বিজয় কৃষ্ণ দাস শর্মার কাছে দীক্ষা নিয়ে বাকী জীবন অতিবাহিত করেন। 1945 সালের (মতান্তরে 1950 সালে) 18 আগস্ট এই মহীয়সী বীরঙ্গনার মহাপ্রয়াণ ঘটে । বাংলা সাহিত্য, রাজনীতি ,দেশসেবা, সমাজসেবা ও মানব সেবার পরিপ্রেক্ষিতে তার মতো বিশিষ্ট মহিলা শুধু সেকালে নয়, একালেও বিরল ।